Monday, January 23, 2017

বাংলাদেশ ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তা ফোরাম শহীদ মিনারে আমরণ অনশন ৫ জন অসুস্থ


দুই দফা দাবি পূরণ করে ১০ হাজার পরিবারকে ধ্বংসের মুখ থেকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে বাংলাদেশে ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তা ফোরাম। এ লক্ষ্যে গত শনিবার থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন পালন করে আসছে সংগঠনের হাজারো সদস্য। ওই দিন সকাল ১০টায় তারা অনশন শুরু করেন। সারা দেশ থেকে প্রায় তিন হাজার সদস্য এতে অংশ নেন। অনেককে কাফনের কাপড় পরে শহিদ মিনারের সামনে শুয়ে পড়তে দেখা যায়। তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ফিরে যাবেন না বলে ঘোষণা দেন। গতকাল সোমবার তৃতীয় দিনের মতো তারা সেখানে অনশন পালন করেন। দাবি আদায়ে আজ মঙ্গলবারও তারা শহীদ মিনারে অনশন পালন করবেন বলে জানান নেতৃবৃন্দ। গতকাল দেশের বিভিন্ন বিভাগের নেতৃবৃন্দ শহীদ মিনারে বক্তৃতা করেন। দাবি পূরণে তারা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনেও চিঠি দিয়েছেন বলে জানানো হয়।
এ দিকে অনশন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী পাঁচজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের কাউকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। কাউকে শহিদ মিনারেই স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। অসুস্থ পাঁচজন হলেনÑ ময়মনসিংহের মো: হারুন অর রশিদ, বাগেরহাটের রনিয়া আক্তার, চাঁদপুরের রহিমা খাতুন, নেত্রকোণার রাজেস্বর দেবনাথ ও সুমা আক্তার। এদের মধ্যে হারুন অর রশিদকে মহাখালী কলেরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অনশন পালনে পুলিশ এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ফোরাম নেতারা।
ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তা ফোরামের দুই দফা দাবি হচ্ছেÑ চাকরি স্থায়ীকরণ এবং জাতীয় বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্তকরণ। দাবি পূরণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তপে কামনা করেন ফোরামের নেতারা।
ফোরামের সভাপতি মো: হাসিম উদ্দিন বলেন, বিনা বেতনে ইউনিয়ন পরিষদ ডিজিটাল স্টোরেরর পরিচালকরা দীর্ঘ ছয় বছর ধরে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি তাদের ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদে নতুন করে হিসাব সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। গত ২১ জানুয়ারি থেকে শহীদ মিনারে আমরণ অনশন কর্মসূচি চলছে।
তিনি জানান, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের পরিচালকেরা জনগণের কাছে সুলভে সরকারি-বেসরকারি সেবা পৌঁছে দিতে বিনা বেতনে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে আসছেন। কিন্তু তাদের বাদ দিয়েই ইউনিয়ন পরিষদে নতুন করে হিসাব সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের জন্য পরিপত্র জারি করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে অযৌক্তিক।
তিনি বলেন, চার হাজার ৫৪৭টি ডিজিটাল সেন্টারে ৯ হাজার ৯৪ জন উদ্যোক্তা কাজ করেন। আমরা এরই মধ্যে দফায় দফায় আন্দোলন করেও সরকাররে সংশ্লিষ্টদের কোনো আশ্বাস আমরা পাইনি। তাই হাজারো পরিবারের কথা বিবেচনা করে আমরা আমরণ অনশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি আরো জানান, ২০১০ সালে ডিজিটাল সেন্টার চালু হওয়ার পর থেকে বিনা বেতনে চুক্তিভিত্তিক সেবা দিয়ে আসছে উদ্যোক্তারা। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর চেয়ারম্যান পরিবর্তনের সাথে সাথে বিভিন্ন ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টার থেকে উদ্যোক্তাদের বের করে দেয়া হচ্ছে। অনেককে নির্যাতন করা হয়েছে। এরই মধ্যে সারা দেশের ডিজিটাল সেন্টার থেকে প্রায় তিন হাজার উদ্যোক্তাকে বের করে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর প্রেস কাবের সামনে সমাবেশের পর এক সংবাদ সম্মলেনে এই র্কমসূচির ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু সরকাররে উচ্চপর্যায়ের আশ্বাসের পরিপ্রেেিত কর্মসূচি কিছু দিন স্থগিত ছিল। তবে দাবি আদায়ে গতকাল থেকে তারা আবারো আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন।
হাসিম উদ্দিন জানান, ডিজিটাল সেবা দেয়ার জন্য গত ছয় বছরে সরকার আমাদের অনেকগুলো প্রশিণ দিয়েছে। ধীরে ধীরে এ কাজে আমাদের দতা বেড়েছে। এখন এই কাজের জন্য আবার আরেকজনকে নিয়োগ দিলে আমাদের কাজের জায়গা কমে যাবে। সারা দেশে আমরা প্রায় ১০ হাজার উদ্যোক্তা তির মুখে পড়ব। ১০ হাজার পরিবার পথে বসবে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তপে কামনা করছি আমরা।

No comments:
Write comments