সাপে কামড়ালে তাত্ক্ষণিক ভাবে কি করবেন জেনে নিন ।।

প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ মারা যায় সাপের ছোবলে। অনেক দেশেই সাপের অত্যাচার দারুণ সমস্যা তৈরি করে। ভারতে প্রতি বছর ১০ লাখ মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়। আমাদের দেশেও মাদারীপুরের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ অদৃশ্য সাপের আতঙ্কে দিনযাপন করছেন। বিষাক্ত সাপের কামড় খেলেও বাঁচার নানা পথ আছে। এ সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের বি জে মেডিক্যাল কলেজের সর্প বিশেষজ্ঞ ড. ভিজে মুরালিধর।

ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় ২৫০ প্রজাতির সাপ দেখা যায়। এদের মধ্যে প্রায় ৫০ প্রজাতি বিষাক্ত। বিশেষ করে কোবরা, ভাইপার, ক্রেইট এবং রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটে। অবশ্য বহু আগে এসব সাপের দৌরাত্ম বেশি ছিল। এখন অনেক কমে এসেছে এদের সংখ্যা। এ ছাড়া একই প্রজাতির ভিন্ন সাপ রয়েছে যাদের বিষ মৃত্যু ঘটানোর জন্যে যথেষ্ট নয়। যেমন হাম্পনোজড পিট ভাইপার। এদের কামড়ে রক্তক্ষরণসহ কিডনি নিষ্ক্রিয় হতে পারে।
আবার উজ্জ্বল বর্ণের ক্রেইট কামড়ালে লক্ষণ অন্য সাপের কামড়ের সঙ্গে মেলানো যাবে না। এর কামড়ে রক্ত ঝরে না বা ব্যথাও অনুভূত হয় না। এমনকি অনেক সময় এর কামড়ের চিহ্নও বোঝা যায় না। তবে যে সাপই কামড় দিক না কেন, প্রথমেই তাকে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া উচিত। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে রোগিকে দ্রুত বিপদমুক্ত করা যায়।
যা করা উচিত :-  প্রথমেই সাপে কামড়ানো রোগীকে আশ্বস্ত করতে হবে যে তার কোনো বিপদ হবে না। উত্তেজনায় রোগীর হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। এতে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। রোগীকে এমনভাবে শোয়াতে হবে যেন কামড়ের স্থান হৃদযন্ত্র বরাবর কিছুটা নিচের দিকে থাকে। দেহের আঁটোসাঁটো পোশাক, অলংকার ইত্যাদি খুলে ফেলুন। কামড়ের ওপর দিকে একটি ফিতা বা রশি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে ফেলুন।
বিষক্রিয়ায় রোগীর হৃদস্পন্দন অনেক সময় বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়। সে ক্ষেত্রে সিপিআর দিন। অর্থাৎ, কেউ পানিতে ডুবে গেলে বা অন্য কোনো শকে আক্রান্তকে শুইয়ে বুকে দুই হাত দিয়ে চাপ দিতে থাকুন। এভাবে তার হৃদযন্ত্র সচল করে ফেলুন। হাসপাতাল দূরের পথ হলে ফোন দিয়ে বিষ নিস্ক্রিয়করণের কোনো ওষুধের নাম শুনে তা প্রয়োগের চেষ্টা করুন
 যা করবেন না :- কামড়ের স্থান সাবান দিয়ে ধোবেন না। আক্রান্ত স্থানের আশপাশে কেটে রক্ত বের করবেন না। ইলেকট্রিক শক দেবেন না। ঠাণ্ডা পানি বা বরফ কামড়ের স্থানে ধরবেন না। বড় বিষয়টি হলো, সে সাপ কামড়েছে তাকে ধরে মারার পেছনে সময় নষ্ট করবেন না। আক্রান্তকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ুন। রোগীকে পানি বা কোনো ধরনের পানীয় পান করাবেন না।
সাপের বিষক্রিয়া দূর করতে এএসভি অ্যান্টিডোট ব্যবহার করা হয়। এভিএস এর আবার মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এতে মধ্যম থেকে মারাত্মক অ্যালার্জির সৃষ্টি হয় যাকে অ্যানাফাইল্যাক্সিস বলে। কাজেই দেহে এএসভি প্রয়োগ করার আগে আবার এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিষ্ক্রিয় করার অ্যান্টিডোটসহ ব্যবহার করতে হবে। আবার কেউ যদি কখনো বিষাক্ত বা সামান্য বিষাক্ত সাপের কামড় খেয়েও বেঁচে যান, তবে দ্বিতীয়বারের কামড়ে তাকে বাঁচাতে শক্তিশালী এএসভি ব্যবহার করতে হবে। কারণ প্রথম কামড়ের পর তার দেহে অ্যান্টিজেন থেকে যায়। দ্বিতীয় কামড়ের কারণে সেই অ্যান্টিজেনের সঙ্গে বিষ মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

Comments

Popular posts from this blog

Buet Engineering Admission Test Question with Solve

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনের অনলাইনে আবেদনের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

National University Honours admission Result 2015-2016