আমাদের দেশে টক জাতীয় কিছু ফলের মধ্যে কামরাঙ্গা অন্যতম। এই ফলে আছে
পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, সুগার (কম পরিমাণে) সোডিয়াম,
এসিড ইত্যাদি।
কামরাঙ্গাতে আছে এমন একটি উপাদান যা মানবদেহের মস্তিষ্কের জন্য বিষ। সাধারণ মানুষ কামরাঙ্গা খেলে কিডনি এই বিষ শরীর থেকে বের করে দেয়। কিন্তু কিডনি রোগীর দুর্বল কিডনি শরীর থেকে এ বিষ বের করে দিতে পারে না। এর ফলে ওই বিষ রক্তের সাথে মিশে যায় এবং তা ধীরে ধীরে মস্তিষ্কে প্রবেশ করে বিষক্রিয়া ঘটায়।
মস্তিষ্কে বিষক্রিয়া ঘটলে ক্রমেই হেঁচকি ওঠে, মাথায় ঘোরায় এবং বমি-বমি ভাব হয়। তখন মাথা কোনো কাজ করতে পারে না। মৃগী রোগীর মতো কাঁপুনি ওঠে এবং মৃত্যু ঘটে। বহু বছর ধরে বিজ্ঞানীরা জানেন যে কামরাঙ্গায় এমন এক উপাদান আছে। কিন্তু উপাদানটি তারা এত দিন খুঁজে পাননি।
সম্প্রতি ব্রাজিলের ইউনিভার্সিটি অব সাও পাওলোর একদল বিজ্ঞানী এ ক্ষতিকর উপাদানটি বের করতে সক্ষম হয়েছেন। তারা এর নাম দিয়েছেন কারাম্বক্সিন। কামরাঙ্গার বৈজ্ঞানিক নাম কারাম্বলা থেকে এ নামটি নেয়া হয়েছে।
কামরাঙ্গা খাওয়ার পর কিডনী রোগীর মধ্যে এই ধরণের লক্ষন গুলো দেখা দিলে দ্রুত তার hemodia
lysis এর ব্যবস্থা নিতে হবে।
শুধু যে অপকারিতা আছে তা নয় । এবার জেনে নিন এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কেঃ
প্রতি একশ গ্রাম কামরাঙ্গায় শক্তি মেলে ৩১ কিলোক্যালরি। শর্করা ৬.৭৩ গ্রাম, চিনি ৩.৯৮ গ্রাম, খাদ্য ফাইবার ২.৮ গ্রাম, স্নেহ ০.৩৩ গ্রাম, প্রোটিন ১.০৪ গ্রাম, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫) ০.৩৯ মিলিগ্রাম, ফোলেট (বি৯) ১২ μg, ভিটামিন সি ৩৪.৪ মিলিগ্রাম ছাড়াও কামরাঙ্গায় পাওয়া যাবে ভিটামিন এ, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও দস্তা।
# ঔষধিগুণ
কামরাঙ্গার ঔষধিগুণও বিস্ময়কর। সুস্বাস্থ্যের জন্য খাদ্য তালিকায় কামরাঙ্গা রাখতে পারেন প্রতিদিন। তার আগে জেনে নিন কামরাঙ্গার ঔষধিগুণ
# অন্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
কামরাঙ্গা রুচি ও হজমশক্তি বাড়ায়। পেটের ব্যথায় কামরাঙ্গা খুব উপকারি। কামরাঙ্গায় আছে এলজিক এসিড। এটি অন্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
# রক্ত পরিষ্কারক
কামরাঙ্গা রক্ত পরিশোধন করে। কামরাঙ্গার পাতা ও কচি ফলে আছে ট্যানিন, যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
# সর্দিকাশিতে উপকারী
কামরাঙ্গা পুড়িয়ে ভর্তা করে খেলে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। দীর্ঘদিনের জমাট সর্দি বের করে দিয়ে কাশি উপশম করে। শুকনো কামরাঙ্গা জ্বরের জন্য খুব উপকারি।
# কৃমিনাশক
কামরাঙ্গা পাতা ও ডগার গুঁড়া খেলে জলবসন্ত ও বক্রকৃমি নিরাময় হয়। কৃমির সমস্যা সমাধানে কামরাঙ্গা ফলও উপকারি। কামরাঙ্গার রসের সঙ্গে নিমপাতা মিশিয়ে খেলে কৃমি দূর হয়।
# অর্শ রোগে উপকারী
দুই গ্রাম পরিমাণ শুকনো কামরাঙ্গার গুঁড়া পানির সঙ্গে রোজ একবার করে খেলে অর্শ রোগে উপকার পাওয়া যায়। আর বাতের ব্যথায়ও কামরাঙ্গা বেশ উপকারী।
No comments:
Write comments