Thursday, May 26, 2016

Why Should You Take Salad Everyday? প্রতিদিন কেন সালাদ খাবেন?


আমরা সবাই জানি সালাদ একটি সাধারণ খাবার|আরো বলা যায় যে, আমরা সবচেয়ে বেশি কম দাম দেই যেই খাবারটিকে, সেটি হলো এই সালাদ| যদিও আমরা জানি এই সালাদ কত স্বাস্থ্যকর খাবার|অন্যদিকে বাইরের দেশ গুলোতে উল্টো কাজ করা হয়|তাদের প্রতিদিনের খাবারের মেনুতে সালাদ থাকবেই থাকবে|তারা খাবার খাওয়ার আগে সালাদ খান|তারা আরো যা মানেন তা হচ্ছে: “A Salad a day, keeps the doctor away”.
পুষ্টিবিদেরা বলেন, আমাদের প্রতিদিনের ও প্রতিবেলার খাবারের মেনুতে অবশ্যই কিছু কাঁচা খাবার থাকবে|এটি আমার আগের পোস্ট–বাঙালিদের কিছু ভুল খাদ্যাভাসে বলেছিলাম|এই কাঁচা খাবার হতে পারে সালাদ|প্রতিদিনের খাবারের মেনুতে সালাদ রাখা হচ্ছে সবচাইতে হেলদি উপায়ে খাবার খাওয়া|
তাহলে চলুন জেনে নেই কেন প্রতিদিন সালাদ খাবেন?

  • সালাদ নিয়মিত খেলে ওজন কমে ও নিয়ন্ত্রণে থাকে: খাবারের শুরুতে বা সাথে সালাদ খেলে অন্য খাবার কম খেতে ইচ্ছা করে, ফলে কম খাওয়া হয় এবং ওজন কমে|
  • সালাদ থেকে প্রচুর ফাইবার পাওয়া যায়: এই ফাইবার আমাদের অবশ্যই দরকার হয় খাবার হজম করার জন্যে| তাই সালাদ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না ও কোলেস্টেরল কমে|ফাইবার হার্টের অসুখ ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করে|
  • সালাদে অনেক রকম শাক-সবজি ও ফল থাকায় অনেক রং পাওয়া যায়, তাই অনেক রকম ভিটামিন ও মিনারেলস পাওয়া যায়, যা আমাদের প্রতিদিনের শরীরের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে|
  • সালাদে কম ক্যালরি থাকে ও পেট ভরা মনে হয়:সালাদে কম ক্যালরি থাকে, তাই সালাদ বেশি খেলে সমস্যা নেই, বরং এতে অন্য বেশি ক্যালোরির খাবার কম খাওয়ার ফলে ওজন কমে বা নিয়ন্ত্রণে থাকে|সালাদে ফাইবার বেশি থাকার ফলে পেট ভরা বোধ হয় ও অন্য অস্বাস্থ্যকর ও ক্যালোরিবহুল খাবার খেতে ইচ্ছা করে না|
  • সালাদ ফল ও সবজির বিকল্প একটি খাবার: পুষ্টিবিদেরা বলেন প্রতিবেলার খাবারে ফল বা সবজি থাকতেই হবে|তাই এই সালাদ ফল ও সবজির চাহিদা, মানে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে| এটি থেকে আমরা ভিটামিন ও মিনারেলস–A, C, B6, E, K, carotene, calcium, folate(folic acid), zinc, iron, magnesium, fiber, phytonutrients পাই|
  • সালাদ খাবার হজমে সাহায্য করে: সালাদের এনজাইম খাবার ঠিক মতো হজমে সহায়তা করে|
  • সালাদে প্রচুর এন্টি-অক্সিডেন্ট থাকে: সালাদ থেকে আমরা vitamin C , E, lycopene, folic acid, এবং  alpha- ও  beta-carotene পাই| কারণ কাঁচা বা সবুজ সালাদে এই পুষ্টি উপাদানগুলো থাকায় আমাদের শরীর প্রচুর এন্টি-অক্সিডেন্ট পায়| তাই শরীর ফ্রি রেডিকেল দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়|
  • সালাদের উপরে উল্লেখিত পুষ্টি উপাদানগুলো বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও রোগ নিয়ন্ত্রণ করে| যেমন: প্রেসার, ডায়বেটিস,হার্টের অসুখ, Alzheimer ইত্যাদি |
  • সালাদ খেলে ক্যান্সারকে দূরে রাখা যাবে :গবেষনায় প্রমানিত হয়েছে যে, প্রতিদিন প্রচুর কাঁচা শাক-সবজি ও ফলমূল খেলে আমাদের শরীর যে পুষ্টি উপদান পায়, তার ফলে ক্যান্সার হতে রক্ষ্যা পায়|সালাদ যেহেতু ফল ও সবজি খাওয়ার কাজ করে,তাই বলা যায় সালাদ খেলে ক্যান্সারকে দুরে রাখা যাবে|
  • সালাদ থেকে ভালো ফ্যাট পাওয়া যায়: সালাদে যদি বাদাম, অলিভ অয়েল দেয়া হয়, তবে সালাদ থেকে ভালো ফ্যাট যেমন:monounsaturated fat , ওমেগা-৩  পাওয়া যাবে|যার ফলে শরীর, সালাদ থেকে খুব ভালো মতো protective petrochemicals(যেমন টমেটোর লাইকোপেন, আলফা ও বিটা ক্যারোটিন ) শোষণ করতে পারে|ফলে শরীরের বার্ধ্যক্য কমে বা সুস্থ্য থাকে|
  • সালাদের লেটুস এসিডের সমস্যা দূর করে: সালাদে লেটুস পাতা ব্যবহার করলে এটি শরীরের এসিডের মাত্র ঠিক রাখে, কারণ এটি alkalizing |
  • সালাদ যে কোনো জায়গায়,দাওয়াতে, রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায়| সালাদ খুব সহজে ও তাড়াতাড়ি তৈরী করা যায়
  • সালাদ খেতে সুস্বাদু, এটি ঠান্ডা ও কচকচে বলে খেতে ভালো লাগে|
  • অনেক রকমের ও রঙের সবজি বা পাতা এতে ব্যবহার করার ফলে এটি আকর্ষনীয় খাবার বলে মনে হয়|
  • সালাদ ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায় বা ত্বক পরিষ্কার রাখে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, কোলেস্টেরল কমায়, হাঁড় শক্ত করে, চোখের জ্যোতি বাড়ায়, মাসেলের শক্তি বৃদ্ধি করে|
সালাদ খাওয়ার ও তৈরির কিছু টিপস:
  • কাঁচা বা সবুজ সালাদ খাওয়া সবচাইতে ভালো|কারণ এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে|
  • আপনার হাতের কাছে যেই সবজি, ফল, শাকপাতা থাকে, তাই দিয়ে সালাদ তৈরী করতে পারেন| ফল দিয়ে টুনা সালাদ একটি হেলদি খাবার বা স্ন্যাক্স হতে পারে, কিভাবে তৈরী করবেন, জানতে ক্লিক করুন|
  • সালাদে সবসময় সবুজ শাকপাতা, যেমন: লেটুস দিতে চেষ্টা করুন, কারণ এই সবুজে আছে Vitamin A, Vitamin C, beta-carotene, calcium, folate,  phytonutrients, ফাইবার ইত্যাদি|আমরা জানি, ক্যালসিয়াম হাঁড় ও দাঁত শক্ত করে, phytonutrients ক্যান্সার প্রতিরোধী এন্টি অক্সিডেন্ট| folate হার্টের সমস্যা দূর করে ও হার্ট ভালো রাখে,ফাইবার হজমের সমস্যায় দূর করে ও কোলেস্টেরল কমায়|
  • দাওয়াতে গিয়ে কম খাওয়ার একটি টিপস হচ্ছে: শুরুতে অনেক সালাদ খাওয়া|তাহলে আর অন্যান্য গুরুপাক খাবার খেতে ইচ্ছা করবে না|
  • ওজন কমাতে চাইলে আগে সালাদ খেয়ে পরে অন্য খাবার খান, তাহলে অন্য বেশি ক্যালোরির খাবার কম খাওয়া হবে,ফলে ওজন কমবে|
  • সালাদ অন্যান্য খাবারের(যেমন ভাত,রুটি,মাংশ ইত্যাদি)চাইতে বেশি খেলে সামস্যা নেই| কারণ আমাদের প্রতিবেলা খাবারের প্লেটের অর্ধেক থাকবে শাক-সবজি ও সালাদ |
  • তবে ফ্যাট মুক্ত ও কম ক্যালরি যুক্ত সালাদ ড্রেসিং ব্যবহার করলে এর ক্যালরি কম হবে ও সালাদ খাওয়ার উপকারিতা পাওয়া যাবে|
  • সালাদ ড্রেসিং হিসাবে অলিভ অয়েল, সরষের তেল, সর্ষে গুড়া বা পেস্ট,টক দই, ফ্যাট মুক্ত ও কম ক্যালরি যুক্ত সালাদ ড্রেসিং বা ম্যায়নিস, ভিনেগার,লেবুর রস ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন|
  • কোনো সবজি যেমন: টমেটো, শসা ইত্যাদিতে কোনো সমস্যা থাকলে অন্য যে কোনো সবজি এতে যোগ করা যায়|
  • সালাদে যেকোন সবজি ও ফল দিতে পারেন|গাজর, পেপে, বিনস, ক্যাপসিকাম, আলু, মিষ্টি আলু, যেকোনো ফল, বাধাকপি, শাক,লেটুস ইত্যাদি ইচ্ছামতো দিয়ে সালাদ তৈরী করা যায়|এমনকি রান্না করা,মাছ, মাংশ, ভাত নুডুলস, পাউরুটি, টক দই ইত্যাদি দিয়েও সালাদ তৈরী করা যায়| সেক্ষেত্রে সেটা হবে একটি কম ক্যালোরির ও হেলদি, সম্পূর্ণ খাবার|
  • সালাদ সব সময় তাজা সবজি বা ফল দিয়ে তৈরী করতে হবে|
  • সালাদের ফল ও শাক-সবজি আগে ভালো মতো ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে তারপর কাঁটতে হবে|
  • সালাদের সব সরঞ্জাম( যেমন: ছুরি, বটি,কাটিং বোর্ড ইত্যাদি) সালাদ কাঁটার আগে ভালো মতো ধুয়ে নিতে হবে|
  • যাদের সালাদ খেলে গ্যাস হয়, তারা ডাক্তারের বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ মতো সালাদ খাবেন|যেমন: শশায় গ্যাস হলে শসা বাদ দিতে পারেন|
একবারে কতটুকু সালাদ খাবেন?
  • একবারে সর্বোচ্চ দুই কাপ বা ৮৫ গ্রাম সালাদ(সবুজ বা কাঁচা শাক সবজির সালাদ) খেতে পারেন|
  • ভাত, রুটি, মাছ, মাংশ সালাদে ব্যবহার করলে তার হিসাব আলাদা ভাবে করতে হবে|
  • মনে রাখবেন–খাবারের প্লেটের অর্ধেক থাকবে সালাদ ও শাক সবজি|বাকি ১/৩ শর্করা,১/৩ আমিষ—এটা সহজ হিসাব|
আপনার প্রতিদিনের খাবারের মেনুতে তাই সালাদ রাখুন| আর আপনার দেহকে সুস্থ্য ও রোগমুক্ত রাখুন|

No comments:
Write comments